মাদল হাসানের কবিতা চট করেই আলাদাভাবে চোখে পড়ে আমাদের-তার লিরিক্যাল ভঙ্গি, মৃদু স্যাটায়ার ও দার্শনিক বীক্ষণের জন্য। লিরিক্যাল, কিন্তু 'সরল বীণার কাঠ'-এ বাঁধা তার সে নয়। ইতিহাসের ছেদগুলি যেন ভরিয়ে তোলে সহস্রার থেকে উৎসারিত সুরের বেদনামাধুরী দিয়ে। এ হলো সেই বেদনা যা পাল্টে দেয় সত্যের দাপুটে মুখ : 'অতিরিক্ত আলো এক ভ্রম'। এই সে-বেদনা যা উল্টো দিকে চায় ঘড়ির কাঁটা ফেরাতে। বলে: 'আমাকে আবার দাও চিরবনবাস/ পাথরের পাঠশালা গড়ি’। শব্দভিক্ষুকের বৈতালিক গান হয়ে ভেসে আসে একটা বৈপরীত্য—কি শব্দে কি চেতনায়— ভিন্নরকম সংঙ্গতিসাধন করতে চায় যেন। তাই জেগে ওঠে অমৃত-অসুখ, হিমদাহ, হাসিবি তামসপিদিম জ্বেলে কবিকেও পথ চলতে হয়। কেননা তিনি নিজেই বাদী ও বিবাদী। এভাবেই চলে তার ’পাল্টাপাল্টি প্রশ্নের পানাহার’ । মূলত সভ্যতার অপঘাতই তাকে ঠেলে দিয়েছে আগুনশৈত্যের এক বিরোধী পাচন' তৈরিতে। ইহঈশ্বরের নশ্বরতা, ক্ষতজ্যোতি—এসবের মধ্য দিয়ে নিশ্চুপ বাঙ্ময়তায় তিনি ধরতে চেয়েছেন। নৈরব্যের সুর। পেতে চেয়েছেন নৈর্বাক্যের বিবিক্ত বাগ্মিতা। অনুভূত কোনো সংবেদন, উপলব্ধ কোনো বোধ এই কালে আর প্রমায় যুক্ত নয় বলে কবির এমন দ্বিমেরু-দ্বিমাত্রিকতা। আতজিজ্ঞাসা তার : 'তবে কি নিজের ছায়াকে যাবে না ছোঁয়া?/ থামবে না রক্তে মুখ ধোয়া?' কখনো লিরিক ছেড়ে মাদলের কবিতা আশ্রয় নিয়েছে প্যারাবলে। আমাদের জীবনের টুকরো-ছিন্ন অংশগুলিই সেখানে মহা-আখ্যানের রূপ নিয়ে জেগে ওঠে সহসা। রচিত হয় নব্যপুরাণ। বোঝাপড়া চলে অগস্ত্য মুনির সাথে। আর আমরাও পেরিয়ে যাই ধীরে, বিন্ধ্যাচলের বাধা। কিন্তু, ফেরার প্রত্যাশা নিয়ে। -সোহেল হাসান গালিব
Title | পাথরের পাঠশালা (হার্ডকভার) |
Author | মাদল হাসান,Madal Hasan |
Publisher | সংহতি প্রকাশন |
ISBN | |
Edition | 2011 |
Number of Pages | 64 |
Country | Bangladesh |
Language | Bengali, |
0 Review(s) for পাথরের পাঠশালা (হার্ডকভার)