প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কয়েক বছর আগে থেকে তুরস্ক সব দিক থেকে হয়ে পড়ে দুর্বল। তার নাম পড়ে যায় ইউরোপের রুগ্নমানব। ইউরোপীয় শক্তিগুলো শুধু অপেক্ষায় ছিল, কীভাবে বিশাল এ ভূখণ্ড নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়া যায়। অবশেষে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যখন এই রুগ্নমানব পরাজিত হয়ে মৃত্যু শয্যায় শায়িত, তখন ইউরোপীয় ভূখ শুধুমাত্র কন্সটান্টিনোপলে তাকে কফিনবদ্ধ করে রাখা হল। তারপর হিংস্র পশ্চিমাশক্তি মরালাশ ছিড়েফেড়ে খাওয়ার জন্য তুরস্কের মূল ভূখণ্ডে লেলিয়ে দেয় গ্রীকদের। ক্রুসেডারদের মত সব ধরনের তাণ্ডব তারা চালিয়ে যায়। ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয় যাদের নাগাল পেয়েছে তাদের। রেহায় মেলেনি অশীতিপর বৃদ্ধ, এমনকি কচি শিশুদেরও। লাঞ্ছিত হয় অগণিত সম্ভ্রান্ত নারী। সর্বত্র চলতে থাকে তাদের তলোয়ার আর পাশবিক নির্যাতনের তাণ্ডব।
বিশ্ববিখ্যাত এই উপন্যাসের মূল চরিত্রে রয়েছে আয়েশা। ঠান্ডা মাথায় গ্রীকরা তার দুই বছরের নিষ্পাপ শিশুটিকে গুলি করে হত্যা করে। তখন তিনি অগ্নিপোশাক পরে নেমে পড়েন প্রতিশোধ নিতে। তবে এ প্রতিশোধের আগুন তিনি ব্যক্তি কিংবা পারিবারিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি। আগুনের এই লেলিহান শিখা ছড়িয়ে দিতে তিনি কাজ শুরু করলেন। এই কাতারে শামিল হল আরো কয়েকজন নওজোয়ান সৈনিক। সংগ্রামের শেষ পর্যন্ত তারা একসাথে থাকল। যুদ্ধের সকল ধকল তারা সমানভাবে ভাগ করে নিল।
এই উপন্যাসের গল্প আমরা শুনি বিয়ামি নামের এক অফিসারের মুখে। সাকারিয়ার যুদ্ধে মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে তিনি পড়ে আছেন এক সামরিক হাসপাতালে। ইতিমধ্যেই তার পা দুটি কেটে ফেলা হয়েছে। এখন অপেক্ষায় আছেন মাথা থেকে গুলি বের করার। বেদনাদায়ক এই অবসরকে তিনি কাজে লাগান তুরস্কের মুক্তিসংগ্রামে তার অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ করে। তাই বলা যায়, এই উপন্যাসটি হচ্ছে এক আহত সৈনিকের স্মৃতিকথা।
আশা করি তুর্কি জাতির এই মহান সংগ্রামের কাহিনি আমাদের সবার জন্য বর্তমান দুর্নীতিপরায়ণ ব্যবস্থা থেকে মুক্তির এক আত্মিক খোরাকের যোগান দিবে। আমরা হয়তো মুক্তি পেতে পারি অভাব ও দুর্নীতিগ্রস্ত নষ্ট সমাজব্যবস্থার আগ্রাসন থেকে।
Title | অগ্নিপোশাক |
Author | হালিদা এদিব হানেম,Halida Edib Hanem |
Publisher | মাকতাবাতুল আফনান,Maktabatu Afnan |
ISBN | |
Edition | |
Number of Pages | |
Country | Bangladesh |
Language | Bengali, |
0 Review(s) for অগ্নিপোশাক